শিরোনাম
Home / লিড নিউজ /  মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের সাথে অনৈতিক আচরণ, অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

 মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের সাথে অনৈতিক আচরণ, অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

[ A+ ] /[ A- ]

 মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের সাথে অনৈতিক আচরণ, অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব  প্রতিনিধি , মুন্সীগঞ্জে-  শিক্ষার্থীদের সাথে অনৈতিক আচরণ, অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা লক্ষ্মীকান্ত স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. তাজুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে  আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীরা দুই ঘণ্টা বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। এ সময় ক্লাস নেওয়া বন্ধ থাকে।
এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির   শিক্ষার্থীরা যাতে বাইরে যেতে ও বিক্ষোভকারীরা ভেতরে ঢুকতে না পারে, সেজন্য সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিক্ষোভকারী সুমাইয়া জানায়, বোরকা পরে কোনো ছাত্রী বিদ্যালয়ে এলে অধ্যক্ষ তাকে হেনস্তা করেন। কোনো নারী শিক্ষককে না ডেকে অধ্যক্ষ নিজেই হাতে থাকা বেত দিয়ে বোরকা উঁচু করে ধরে ভেতরে স্কুল ড্রেস আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখেন। আরেক ছাত্রী অভিযোগ করেন- কোনো সময় কোনো এনজিও বিদ্যালয়ে এসে মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্যানিটারি ন্যাপকিন দিয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক নিজেই ছাত্রীদের ন্যাপকিনের ব্যবহার বিধি শেখান। অথচ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ আরও পাঁচজন নারী শিক্ষক রয়েছেন।

অভিভাবক সবুজ বেপারী জানান, প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রভাবশালী ব্যক্তি ছাড়া কাউকে পাত্তা দেন না তিনি। আরেক অভিভাবক আজিম হাওলাদার জানান, গত বছরের ২৪ আগস্ট তাঁর নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সাদা সালোয়ারের পরিবর্তে সাদা চুড়িদার পরে বিদ্যালয়ে আসার অপরাধে দ্বিতীয় ক্লাসের পরে তাকে বের করে দেওয়া হয়। এ খবর পেয়ে অভিভাবক আজিম অধ্যক্ষের কাছে ছুটে যান এবং তাঁর পক্ষে মেয়েকে দুই সেট স্কুল ড্রেস কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে জানান। এর পর অধ্যক্ষকে তিনি তাঁর মেয়েকে ওই দিনের মতো বাকি ক্লাসগুলো করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেন। এতে অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে আজিমকে জোড়া বেত দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করেন। স্বামীকে রক্ষা করতে এসে আজিমের স্ত্রীও অধ্যক্ষের বেতের আঘাতের শিকার হন।
বিক্ষোভকারী সামসুদ্দোহা জানান, এ বছর দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় এক থেকে ছয়টি বিষয়ে অকৃতকার্যদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য মনোনীত করেন এবং ফরম পূরণ করার সুযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ইউএনওকে জানান। ইউএনও মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল সব বিষয়ে কৃতকার্য ৩৭ জন ও এক বিষয়ে অকৃতকার্যদের বাদ দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ না করার নির্দেশ দেন।
এর পরে অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে নেওয়া কোচিং ফিস ফিরিয়ে দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণের টাকাও ফেরত চেয়েছে।
বিক্ষোভের সময় অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বিদ্যালয়ে ছিলেন না। তিনি ঢাকায় গেছেন বলে জানান সহকারী প্রধান শিক্ষক সাহানা আক্তার।

এ ব্যাপারে  সহকারী শিক্ষক সাহানা আক্তারের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে  অধ্যক্ষের বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে একাধিক বিষয়ে ফেল করা এসএসসি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক তাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুল হক বলেন,  লিখিতভাবে অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
সংবাদটি শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*