ডেস্ক রির্পোটঃ
যুক্তরাষ্ট্রে ‘বেপরোয়া ও নির্দয় আঘাত’ হানার হুশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি আরও জানিয়েছে, ‘পিয়ংইয়ং নিমিষেই যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো জায়গায় আঘাত হানতে পারে। শুধু গুয়াম, হাওয়াই নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে ‘নির্দয় আঘাত’ হানতে সক্ষম পিয়ংইয়ং। আর উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র শুধু আমেরিকার জন্যই তৈরি করা হয়েছে।’ উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক রডং সিনমুন রোববার এক নিবন্ধে এই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। খবর সিএনএনের।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উলচি ফ্রিডম সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর একদিন আগে এমন হুশিয়ারি দিল উত্তর কোরিয়া। ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে, দেশটি আমেরিকা ছাড়া আর কোনো দেশে হামলা চালানোর জন্য পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেনি। পিয়ংইয়ং বলেছে, মার্কিন সরকারের অনুগত পশ্চিমা গণমাধ্যম এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আরও কিছু দেশকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলতে চায়। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার হামলার একমাত্র টার্গেট আমেরিকা। অন্য কোনো দেশ যদি পিয়ংইয়ংবিরোধী তৎপরতায় আমেরিকার সঙ্গে জোট না বাধে তাহলে সেসব দেশের কোনো ভয় নেই। রডং সিনমুন আরও জানায়, ‘ট্রাম্পের গোষ্ঠীরা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে বেপরোয়া পরমাণু যুদ্ধ মহড়ার ডাক দিয়েছে।
এ ধরনের পদক্ষেপ পরমাণু যুদ্ধের অপ্রতিরোধ্য অধ্যায়ের দিকে ধাবিত করছে।’ এছাড়া উত্তর কোরিয়াকে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের ‘শক্তিশালী মালিক’ বলেও উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি। উত্তর কোরিয়া এর আগে ঘোষণা করেছে, আমেরিকার বিদ্বেষনীতি এবং হামলা চালানোর হুমকির কারণে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে বাধ্য হয়েছে পিয়ংইয়ং।
দেশটি আরও বলেছে, আমেরিকা যাতে পরমাণু যুদ্ধ শুরু করতে না পারে সেজন্য আত্মরক্ষার স্বার্থে এই অস্ত্র তৈরি করেছে দেশটি। শনিবার উত্তর কোরিয়া বেশ কিছু পোস্টার বিলি করেছে যাতে দেখা যাচ্ছে দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র আমেরিকায় আঘাত হানছে।
ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়ে জাপানে মহড়া : উত্তর কোরিয়া যদি হামলা চালায় তাহলে বাঁচার কৌশল কী হবে, সে বিষয়ে শনিবার মহড়া চালিয়েছে জাপানের একটি উপকূলীয় শহরের বাসিন্দারা। প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের গুয়াম দ্বীপে উত্তর কোরিয়া হামলা চালালে তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র কাতৌরা নামের এই শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির ওপর দিয়ে যাবে। ফলে বাঁচার কৌশল নিয়ে আগেভাগে মহড়া চালাচ্ছে তারা। মহড়ার শুরুতে একটি স্পিকারে সাইরেন বাজানো হয়। উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে এ ধরনের সাইরেন বাজানো হবে। তখন মাঠে ফুটবল খেলছিল শিশুরা। সাইরেন শুনে শিশুরা তাদের বাবা-মা ও কোচের সঙ্গে ছুটে গিয়ে স্কুলভবনে আশ্রয় নেবে।
মহড়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিশুদের ফুটবল কোচ ৩৮ বছর বয়সী আকিরা হামাকাওয়া বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই উদ্বেগে থাকি, এখানে হয়তো কিছু একটা পড়তে পারে বা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সক্ষমতার ঘাটতির কারণে ভুল স্থানেও ক্ষেপণাস্ত্র পড়তে পারে।’