শিরোনাম
Home / গজারিয়া উপজেলা / বাবা,ভাই নাই মুন্সীগঞ্জে চিকিৎসার অভাবে  ৪ বছর ধরে শিকলবন্দি আক্তার

বাবা,ভাই নাই মুন্সীগঞ্জে চিকিৎসার অভাবে  ৪ বছর ধরে শিকলবন্দি আক্তার

[ A+ ] /[ A- ]

বাবা  ভাই  নাই মুন্সীগঞ্জে চিকিৎসার অভাবে  ৪ বছর ধরে শিকলবন্দি আক্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি – বাবা নেই , ভাইও নেই আক্তার হোসেনের। ৩ বোন ও মাকে নিয়ে তার সংসার। অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন আক্তার । জন্মের পর থেকে সুস্থ থাকলেও ৪ বছর আগে  হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে সে। এখোন সে সম্পূণ মানুষিক ভারসাম্যহীন । রাস্তাঘাটে মানুষকে বিরক্ত করায় তার বিরুদ্ধে মানুষের অন্তহীন অভিযোগ।  তাই নিজ বাড়িতে ৪ বছর ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে তাকে।  তালাবদ্ধ অবস্থায় এখোন তার জীবন যাপন । কি কারনে মানুষিক ভারসাম্যহীন হলেন আক্তার চিকিৎসা করাতে না পারায় তার সঠিক কারন যানা নেই পরিবারের। আক্তার হোসেন (২৩) মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের পুরান চরচাষী গ্রামের মৃত মোস্তাক মিয়ার ছেলে। ৩ বোনের একমাত্র ভাই আক্তার পরিবারের সবার ছোট সন্তান।

ওই পরিবারে উপার্জন করার মতো কোন পুরুষ মানুষ নেই। আক্তারের চিকিৎসাতো দূরের কথা সংসার চালাতে হিমশীম খেতে হচ্ছে তার পরিবারের।   আর্থিক সংকটে সংসার চালাতে গার্মেন্টেসে চাকুরি নিয়েছেন বড় বোন সুফিয়া।

সুফিয়া বলেন, আমরা ৪ ভাই বোনের মধ্যে আক্তার সবার ছোট। জন্মের পর হতে একেবারে সুস্থ  ছিলো সে।  হঠাৎ করে ৪ বছর আগে অসুস্থ হয়ে পরে । অসুস্থ হয়ে রাস্তাঘাটে পাগলামী করায় মানুষ বকাঝকাঁ করে। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে শিকল দিয়ে বেধে রেখেছি।  তাকে আমরা অনেক কবিরাজের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু তারপরেও সুস্থ হয়নি। সুফিয়া আরো বলেন, আমি গার্মেন্টসে কাজ করে সংসারের খরচ চালাই। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাইতে কষ্ট হয়। ভাইয়ের চিকিৎসা করানোর সাধ্য আমার নাই।  আর্থিক সংকটের কারনে চিকিৎসা করাতে পারছিনা।  ৪ বছর ধরে বিনা চিকিৎসায় ভাইটিকে শিকল দিয়ে আটকে রেখেছি । প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহু আবেদন নিবেদন করেও কোনো কাজে আসেনি। কেউ সহযোগীতা করেনি তাই ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে পারছিনা।  প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ছাড়া আমাদের ভাগ্য আর কোন সাহয্য সহযোগীতা জুটেনি।

এ ব্যাপারে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলী আহম্মেদ বলেন, ৪ বছর আগে থেকে ছেলেটা মানুষিক ভারসাম্যহীন। রাস্তাঘাটে পাগলামী করে বেড়ানোয় মানুষ গালমন্দ করায় তাকে বাড়িতে সেকল বন্দি করে রাখা হয়েছে। ছেলেটার বাবা নাই, ভাইও নাই, ৩টা বোন আছে। বোন ও মা ছেলেটার চিকিৎসা করাতে হিমশিম খাচ্ছে। আমার পক্ষে যতটা সম্ভব হয় সাহয্য সহযোগীতা করছি। কিন্তু ছেলেটার আরো ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন।

গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকন জানান, ইউনিয়ন পরিষদের আওতায়  চিকিৎসা সেবা দেয়ার মতো কোন সুযোগ নেই। একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ওই পরিবারকে সহায়তার বিষয়ে  অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  কহিনুর আক্তার বলেন, আমি এখানে নতুন। বিষয়টি আপনার কাছ হতে অবগত হলাম।  আমি এ বিষয়ে গজারিয়া  সমাজসেবা অফিসারকে বলে  দিচ্ছি আপনি  ওই  পরিবারকে  সমাজসেবা অফিসে এসে যোগাযোগ করতে বলবেন।

Print Friendly, PDF & Email
সংবাদটি শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*